বজ্রপাত-কালবৈশাখী বৃদ্ধির শঙ্কা

Daily Inqilab শফিউল আলম

০৬ মে ২০২৪, ১২:০৬ এএম | আপডেট: ০৬ মে ২০২৪, ১২:০৬ এএম

তাপদাহে ভ্যাপসা গরমের যাতনার পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন এলাকায় দমকা থেকে ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে বৃষ্টি, বজ্রসহ বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এই সুবাদে উচ্চতাপের দাপট কমে আসছে। জনজীবনে আসছে কমবেশি প্রশান্তি। আবার অনেক জায়গায় টানা খরা-তাপদাহে বিরাজ করছে অস্বস্তি ভোগান্তি। গতকাল সোমবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল চুয়াডাঙ্গায় ৪০ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয় ময়মনসিংহে ৮৩ মিলিমিটার। এদিকে টানা এক মাসেরও বেশিদিন নজিরবিহীন উচ্চতাপ, খরা-অনাবৃষ্টির পর এবার দেশে ভয়াবহ আকারে বজ্রপাত এবং কালবৈশাখীর আশঙ্কা করছেন আবহাওয়া ও ভূতত্ত্ব বিশেষজ্ঞমহণ। কারণ দেশে টানা তীব্র থেকে অতি তীব্র তাপপ্রবাহের পরই (বর্ষার দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু প্রবেশের পূর্বে) বজ্রপাত ও কালবৈশাখী ঝড় বৃদ্ধির আবহ তৈরি হয়। গতকালও বজ্রপাতে বিভিন্ন স্থানে প্রাণহানি ঘটে। গতকাল আবহাওয়া বিভাগ (বিএমডি) কালবৈশাখী ঝড় এবং বজ্রপাতের বিশেষ সতর্কবার্তা জারি করেছে। সতর্কবার্তায় আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক জানান, গতকাল থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের উপর দিয়ে বিচ্ছিন্নভাবে পশ্চিম বা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ কালবৈশাখী ঝড় বয়ে যেতে পারে। এ সময় কালবৈশাখী ঝড়ের সাথে বজ্রপাত ও বিচ্ছিন্নভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে। দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি, বজ্রসহ বৃষ্টি, শিলাবৃষ্টিতে চলমান তাপদাহের দাপট ক্রমইে হ্রাস পাচ্ছে। তবে যেসব জায়গায় টানা এক মাসেরও বেশিদিন ধরে চলা নজিরবিহীন খরা-অনাবৃষ্টি, উচ্চ তাপপ্রবাহে এখনও কাটেনি, সেখানে জনজীবনে হাঁসফাঁস অবস্থা অব্যাহত রয়েছে। এর মধ্যে প্রধানত রয়েছেÑ ঢাকা, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের অধিকাংশ এলাকা। টানা উচ্চতাপ ও খরায় অনেক জায়গায় আধাপাকা রোরো-ইরি ফসল, আম-লিচু, জাম, পেঁপেসহ ফল-ফলাদির ফলন ব্যাহত হচ্ছে। ফল আগেভাগে ও আকারে ছোট থাকা অবস্থায় পেকে যাচ্ছে। এক মাসেরও বেশি সময়ে চলা উচ্চ তাপদাহ, খরা-অনাবৃষ্টির কারণে চিংড়ি ঘেরসহ মৎস্য, ডেয়রি ও পোলট্রি খামারে ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। প্রচণ্ড গরমে প্রতিদিনই অসংখ্য মুরগি ও বাচ্চা মারা যাচ্ছে। প্রায়ই ঘরে মানুষ অসুস্থ হচ্ছে।

গতকাল চুয়াডাঙ্গা ছাড়াও উচ্চ তাপমাত্রা ছিলÑ রাজশাহী ও পাবনায় ৩৯.৮, যশোরে ৩৯.৪, কুষ্টিয়ায় ৩৮.৬ ডিগ্রি সে.। রাজধানী ঢাকায় তাপমাত্রা ছিল সর্বোচ্চ ৩৬.৭ এবং সর্বনিম্ন ২৫.৩ ডিগ্রি সে.। গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় আরও বৃষ্টিপাত হয়েছে নেত্রকোণায় ৬৭, সিলেটে ৩৪, কুমিল্লায় ৩১, কিশোরগঞ্জে ২৯, শ্রীমঙ্গলে ১১, বগুড়ায় ১০, কক্সবাজারে ৮ মিলিমিটার।

চলতি সপ্তাহের পূর্বাভাস : আজ সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টাসহ পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার (তিন দিন) আবহাওয়া পূর্বাভাসে আবহাওয়াবিদ মো. শাহীনুল ইসলাম জানান, ঢাকা, রাজশাহী, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের উপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এই তাপপ্রবাহ অধিকাংশ জায়গা থেকে কমে বা স্বাভাবিক হয়ে আসতে পপারে। সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা স্থানভেদে এক থেকে ৩ ডিগ্রি সে. পর্যন্ত কমতে পারে।

ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায়; ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ী দমকা, ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি, বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্ত শিলাবৃষ্টি হতে পারে।

আগামীকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে জানা গেছে, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায়; ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ী দমকা, ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি, বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্ত শিলাবৃষ্টি হতে পারে। সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে।

আগামী বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে জানা গেছে, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায়; ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ী দমকা, ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি, বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্ত শিলাবৃষ্টি হতে পারে। সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা কিছুটা হ্রাস পেতে পারে।
এর পরের ৫ দিনে সারাদেশে বৃষ্টি, বজ্রসহ বৃষ্টিপাতের প্রবনতা অব্যাহত থাকতে পারে।
আবহাওয়া বিভাগ জানায়, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ থেকে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল হয়ে উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।

দুই নম্বর নৌ-হুশিয়ারি সঙ্কেত : গতকাল আবহাওয়া বিভাগের বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে দেশের অভ্যন্তরীণ নদী বন্দরসমূহের জন্য দেওয়া আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা, মৌলভীবাজার, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ ও সিলেট জেলাসমূহের উপর দিয়ে পশ্চিম বা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘন্টায় ৬০ থেকে ৮০ কিলোমিটার বেগে বৃষ্টি, বজ্রবৃষ্টিসহ অস্থায়ীভাবে
ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দর সমূহকে ২ নম্বর সতর্ক সঙ্কেত দেখাতে বলা হয়েছে।
বজ্রপাত বাড়বে, বাড়তে পারে প্রাণহানি : গতকাল জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলের ‘বজ্রপাত বাড়বে, বাড়তে পারে প্রাণহানি’ শীর্ষক এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে বজ্রপাতের প্রবণতা এবং বজ্রপাতে মৃত্যুর আশঙ্কা দু’টিই বেড়ে চলেছে। গরম বেশি হওয়ায় চলতি বছর বেশি বজ্রপাত হওয়ার আশঙ্কা করছেন আবহাওয়াবিদেরা। এদিকে গতকাল পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা উপজেলার বেলছড়ি এবং দীঘিনালা উপজেলার কবাখালীতে বজ্রপাতে মা-ছেলেসহ ৪ জন মারা গেছে। এ সময় বজ্রপাতে তাদের বসতঘরে আগুন লেগে যায়।

গত বৃহস্পতিবার প্রচণ্ড তাপদাহের মধ্যে বৃষ্টির সময় বজ্রপাতে ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। চলতি বছরে এ পর্যন্ত বজ্রপাতে ২২ জন (গতকাল আরও ৪ জনসহ ২৬ জন) মারা গেছেন বলে জানিয়েছে ডিজাস্টার ফোরাম। আবহাওয়াবিদ ও আবহাওয়া-প্রকৃতি বিশ্লেষকরা বলছেন, এবার তাপ বেশি হওয়ার কারণে বজ্রপাত বেশি হবে। আর একই সঙ্গে বর্ষাকালের দৈর্ঘ্য বেড়ে যাওয়ার কারণে বজ্রপাতের সংখ্যাও বেশি হবে। অন্যদিকে বজ্র প্রতিরোধ ব্যবস্থার অপ্রতুলতা এবং অসচেতনতার কারণে মৃত্যুও বেশি হওয়ার আশঙ্কা আছে।

ডিজাস্টার ফোরাম বলছে, বালাদেশে বজ্রপাতে মৃত্যু এড়াতে আগাম সতর্কতা এবং আবহাওয়া বার্তা খুব জরুরি।
ডিজাস্টার ফোরামের সদস্য ঢাবি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক ও ব্র্যাকের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও জলবায়ু পরিবর্তন কর্মসূচির পরিচালক গওহার নাঈম ওয়ারা বলেন, কক্সবাজারে গত বৃহস্পতিবার নিহতদের মধ্যে তিন জন বজ্রপাতে মারা গেছেন। লবণ ক্ষেতে বৃষ্টির সময় লবন ঢেকে দিতে গিয়েছিলেন তারা। বৃষ্টি যে আসবে তা আগে থেকেই বলা হচ্ছিল। তাদের আগে থেকেই সতর্ক করা যেত। তাদের আগেই লবণ ক্ষেত ঢেকে দেয়ার জন্য সচেতন করা যেত, সেটা করা হয়নি।

পিয়ার-রিভিউ জার্নাল হেলিয়ন-এ ‘বাংলাদেশে বজ্রপাত পরিস্থিতির উপর জিআইএস (জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সিস্টেম) ভিত্তিক স্থানিক বিশ্লেষণ প্রবন্ধে বলা হয়েছে, বেশিরভাগ প্রাণহানি বর্ষা-পূর্ব মৌসুম এবং বর্ষা ঋতুতে ঘটে। যার মধ্যে উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চল সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা। বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণে বাংলাদেশে আবহাওয়ার ধরণ ও বৈশিষ্ট্য ব্যাপকভাবে পরিবর্তিত হচ্ছে। যার ফলে দীর্ঘস্থায়ী তাপপ্রবাহ, শৈত্যপ্রবাহ এবং ঋতু পরিবর্তনের মতো ঘটনা ঘটছে। এ কারণেই বজ্রপাত বাড়ছে। উক্ত গবেষণার বাংলাদেশে প্রধান গবেষক অধ্যাপক ফেরদৌস আহমেদ বলেন, বৈশ্বিক উষ্ণতার কারণে এবার বজ্রপাতের আশঙ্কা বাংলাদেশে বেশি।

মেঘের সঙ্গে তাপের একটা সম্পর্ক আছে। তাপ বেশি হলে মেঘে কেমিক্যাল ও ইলেকট্রিক্যাল প্রোপার্টি বেশি হবে। ফলে এবার বজ্রপাত বেশিই হতে পারে। বজ্রপাতে হতাহত বাড়ার পেছনে আমাদের দায়িত্বজ্ঞানহীতা কাজ করেছে। ব্রিটিশরা আমাদের এখানে ফসলের ক্ষেতে বড় বড় কপার দন্ড লাগিয়েছিল। কিন্তু আমরা সেগুলো তুলে অর্থের লোভে বিক্রি করে ফেলেছি।

জাতিসংঘ বলছে বাংলাদেশে প্রতিবছর গড়ে ৩০০ জন বজ্রপাতে মারা যায়। অথচ সেখনে যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশে মারা যায় বছরে গড়ে ২০ জনেরও কম। বাংলাদেশে গাছপালা কেটে ফেলা বিশেষ করে খোলা মাঠে উঁচু গাছ ধবংস কওে ফেলা, প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা না নেয়া এবং অসচেতনতার কারণে বজ্রপাতে মৃত্যু বাড়ছে।

ফিনল্যান্ডের বজ্রপাত বিষয়ক গবেষণা সংস্থা ভাইসালার তথ্য বলছে, বাংলাদেশে বজ্রপাতে যারা মারা যান তাদের ৭০ ভাগই কৃষক বা যারা খোলা মাঠে কাজ করেন। এছাড়া বাড়ি ফেরার পথে ১৪ শতাংশ এবং গোসল ও মাছ ধরার সময় ১৩ শতাংশ মানুষ বজ্রপাতের ফলে মারা যায়। গওহার নাঈম ওয়ারা বলেন, দেশে বজ্র নিরোধে তাল গাছ লাগানো প্রকল্প ব্যর্থ হয়েছে। কারণ যেখানে তাল গাছ লাগানো দরকার সেখানে লাগানো হয়নি।

আসলে শুধু তাল গাছই নয়; যেকনো উঁচু গাছ বজ্র নিরোধে সহায়তা করে। আসলে আমাদের গাছ লাগানোর চেয়ে গাছ কাটা বন্ধ করতে হবে। এখন জুন মাসে নড়াইলে তাল গাছের ডোঙার (এক ধরনের নৌকা) হাট বসবে। প্রতিবছর সেখানে ১০ থেকে ১৫ হাজার ডোঙা বিক্রি হয়। একটা তাল গাছে দুইটা ডোঙা হয়। তাহলে সাত-আট হাজার তাল গাছ কাটা হবে এক মৌসুমে। নড়াইলের ডিসি চাইলে কিন্তু এটা বন্ধ করতে পারেন।

‘সেভ দ্য সোসাইটি অ্যান্ড থান্ডারস্টর্ম অ্যাওয়ারনেস ফোরামে’র গবেষণা সেলের প্রধান আবদুল আলীম জানান, বজ্রপাত বেড়ে যাওয়ার প্রধান কারণ দু’টি। বৈশ্বিক উষ্ণতা বেড়ে যাওয়া এবং বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে গাছপালা বিশেষ করে মাঠের উঁচু গাছ কেটে ফেলা। হাওর অঞ্চলের মাঠে আগেও তেমন গাছ ছিল না। এখন অন্যান্য এলাকার গাছও কেটে ফেলা হয়েছে। ফলে মাঠে বা খোলা জায়গায় যে সব মানুষ থাকেন বজ্রপাতের এক কিলোমিটারের মধ্যে বিদুৎ পরিবাহী উঁচু জিনিস হিসেবে সেই মানুষকেই পায়।

মানুষ না থাকলে মাঠের গবাদি পশু। ফলে মানুষ ও গবাদি পশু মারা যায়। ‘অনেকে মনে করেন ওই সময় গাছের তলায় আশ্রয় নেয়া নিরাপদ। আসলে এটা ঠিক নয়। আশ্রয় নিতে হবে বাড়িঘরে বা পাকা স্থাপনার নিচে। তার মতে সনাতন পদ্ধতিতে লাইটেনিং অ্যারেস্টার লাগালে বজ্রনিরোধ করা যায়। এতে খরচ কম। একটি বাড়িতে ১০ হাজার টাকা খরচ করেই লাগানো যায়। আর সরকার হাওড় এবং খোলা জায়গায় এগুলো লাগানোর উদ্যোগ নিতে পারে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. মিজানুর রহমান বলেন, প্রতিবছর ৩শ’রও বেশি মানুষ মারা যাচ্ছে বজ্রপাতে। এটা এলার্মিং। আমরা লাইটেনিং আ্যরেস্টার লাগানোর একটা পরিকল্পনা নিয়েছি। কিন্তু এটা এখানো প্ল্যানিং কমিশন পাশ করেনি। কত জায়গায় এটা লাগাতে হবে তারও কোন সমীক্ষা নেই। এটা বেশ ব্যয়বহুল। সারাদেশে যে আশ্রয়কেন্দ্র আছে সেগুলোকে বজ্রপাতের সময় আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহারের উপযোগী করছি। নতুন আশ্রয়কেন্দ্রও হবে। তবে সবগুলোই বলা যায় প্রক্রিয়াধীন।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, তারা বজ্রপাতের আগাম সতর্কবার্তা পাঠাতে আটটি বজ্রপ্রবণ জেলায় বজ্রপাত শনাক্তকরণ সেন্সর স্থাপন করেছে। আর একটি পাইলট প্রকল্পের কাজ চলছে। যাতে নির্দিষ্ট এলাকায় উপস্থিত লোকজনকে বার্তা পাঠানো যায়। অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান বলেন, কুমিল্লা, নোয়াখালী, যশোর , কুষ্টিয়া, ময়মনসিংহ, সিলেট ও ঢাকা বিভাগ আগে বজ্রপ্রবণ ছিল। এখন সারাদেশেই বজ্রপাত হয়। আর এই সময়ে যদি বৃষ্টিপাত হয় তাহলে বজ্রপাত অবধারিত। তাই মানুষকে সতর্ক থাকতে হবে। এই সময় তাপমাত্রা বেশি থাকার কারণে বজ্র মেঘ তৈরি হয় বেশি। আর এই মেঘের স্থায়িত্ব সর্বোচ্চ দেড় ঘন্টা। ##


বিভাগ : জাতীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

সমীকরণ মেলানোর রুদ্ধশ্বাস নাটকীয়তা শেষে চেন্নাইকে বিদায় করে প্লে-অফে বেঙ্গালুরু

সমীকরণ মেলানোর রুদ্ধশ্বাস নাটকীয়তা শেষে চেন্নাইকে বিদায় করে প্লে-অফে বেঙ্গালুরু

ইসরাইলি সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে

ইসরাইলি সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে

প্রোটিন উদ্ভাবনে নতুন উদ্যোক্তাদের সুযোগ দিচ্ছে ইউএসএসইসি-এর পিচ-টু-ফর্ক

প্রোটিন উদ্ভাবনে নতুন উদ্যোক্তাদের সুযোগ দিচ্ছে ইউএসএসইসি-এর পিচ-টু-ফর্ক

স্যানিটেশন কর্মীদের স্বাস্থ্য নিরাপত্তা দিতে হারপিক ও সাজেদা ফাউন্ডেশন সমঝোতা

স্যানিটেশন কর্মীদের স্বাস্থ্য নিরাপত্তা দিতে হারপিক ও সাজেদা ফাউন্ডেশন সমঝোতা

বড় পরিসরে আর. কে. মিশন রোডে ব্র্যাক ব্যাংকের শাখা উদ্বোধন

বড় পরিসরে আর. কে. মিশন রোডে ব্র্যাক ব্যাংকের শাখা উদ্বোধন

বিএনপি ভোট বর্জন করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও গণতন্ত্রের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে : শামসুজ্জামান দুদু

বিএনপি ভোট বর্জন করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও গণতন্ত্রের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে : শামসুজ্জামান দুদু

ভালুকার সেই শিশু দত্তক নিতে ৪ আবেদন, সিদ্ধান্ত রোববার

ভালুকার সেই শিশু দত্তক নিতে ৪ আবেদন, সিদ্ধান্ত রোববার

যক্ষা রোগ প্রতিরোধে ওয়ার্ডভিত্তিক প্রচারণা

যক্ষা রোগ প্রতিরোধে ওয়ার্ডভিত্তিক প্রচারণা

সুনামগঞ্জে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলামের দাফন সম্পন্ন

সুনামগঞ্জে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলামের দাফন সম্পন্ন

পানির সংকট

পানির সংকট

নীতি ও দুর্নীতির লড়াই

নীতি ও দুর্নীতির লড়াই

শিক্ষা ব্যবস্থার ভয়াল দশা

শিক্ষা ব্যবস্থার ভয়াল দশা

মামলাজট কমাতে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে

মামলাজট কমাতে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে

ইসলামী আন্দোলনের নেতা অধ্যাপক বেলায়েত হোসেনের দাফন সম্পন্ন

ইসলামী আন্দোলনের নেতা অধ্যাপক বেলায়েত হোসেনের দাফন সম্পন্ন

দালালীকে পেশা হিসাবে নেওয়া প্রসঙ্গে।

দালালীকে পেশা হিসাবে নেওয়া প্রসঙ্গে।

দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হামাস ভয়াবহ আঘাতের মুখে ইসরাইল

দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হামাস ভয়াবহ আঘাতের মুখে ইসরাইল

পথ হারিয়েছে বিশ্ব : জাতিসংঘ

পথ হারিয়েছে বিশ্ব : জাতিসংঘ

তাইওয়ান প্রণালীতে মার্কিন জাহাজের অনুপ্রবেশ

তাইওয়ান প্রণালীতে মার্কিন জাহাজের অনুপ্রবেশ

যুক্তরাষ্ট্রের উচিত আঞ্চলিক উত্তেজনা বৃদ্ধি না করা

যুক্তরাষ্ট্রের উচিত আঞ্চলিক উত্তেজনা বৃদ্ধি না করা

গাজা ইস্যুতে বন্ধু হারাচ্ছে ইসরাইল নানামুখী চাপে নেতানিয়াহু

গাজা ইস্যুতে বন্ধু হারাচ্ছে ইসরাইল নানামুখী চাপে নেতানিয়াহু